আমরা আমাদের প্রতি দিনকার নিয়মিত রান্নায় চিনি ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও তিনি জাতীয় বিভিন্ন খাবার যেমন মিষ্টি দই পায়েস সেমাই ইত্যাদি আমাদের সবচেয়ে প্রিয় খাবারের তালিকায় থাকে।
এছাড়াও আমরা দুবেলা চা বা কফি জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে যাতে চিনি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে চিনি খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে কারণ অতিরিক্ত চিনি খেলে তা আপনার স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, প্রদাহ, ওজন বেড়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার ইত্যাদি। চিনি কয়েক ধাপে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। যে কারণে এর অধিকাংশ পুষ্টিগুণ হারিয়ে যায়।
তবে চিনির পরিবর্তে গুড় ব্যবহার করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকার হতে পারে কেননা গুড় তৈরি হয় খেজুরের বা আখের রস জ্বাল করে। প্রাকৃতিক উপাদানগুলো থেকে তৈরি হওয়ায় এতে থাকে বেশকিছু ভিটামিন ও খনিজ যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। পরিশোধিত চিনির চেয়ে গুড় অনেক বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ, যেখানে চিনিতে কেবল ক্যালোরিই থাকে। তাই চিকিৎসকদের মতে এটি চিনির মতো হলেও চিনির চেয়ে এর পুষ্টিমান অনেক বেশি এবং এতে ক্যালরির পরিমাণ বেশি।
চিনির তৈরি সব খাবারে চিনির বদলে গুড় ব্যবহার করাই স্বাস্থ্যকর- এমনটা মনে করেন বেশিরভাগ মানুষ। আসলেই কি তাই? ভারতের সেলিব্রিটি পুষ্টিবিদ রুজুতা দিওয়েকার এটি এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন- এটি কেবল অদল-বদল করে নিলেই হয়ে গেল না, বিষয়টি আরেকটু জটিল।
সম্প্রতি তিনি ইনস্টাগ্রামে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও আপলোড করেছেন সেখানে তিনি বলেছেন চিনির পরিবর্তে গুড় জাতীয় খাবার ব্যবহার করলেই তা কখনোই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার হতে পারেনা। এর বদলে আপনি যখন কোন খাবার তৈরি করবেন তখন তা কোন ঋতু এবং কোন প্রকারের খাবার তৈরি হবে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন। সেইসঙ্গে লক্ষ করুন খাবার তৈরির অন্যান্য উপকরণগুলো কোনটির সঙ্গে ভালো মানায়, গুড় নাকি চিনি?
শীতকালে বাজারে প্রচুর পরিমাণে গুড় পাওয়া যায় তাই এ ঋতুতে গুড়ের তৈরি অন্যান্য জিনিস আমাদের কাছে মানানসই এবং খেতেও সুস্বাদু।
আবার অন্যান্য ঋতু গুলোতে চিনিজাতীয় খাবার বা চিনি মিষ্টির ক্ষেত্রে মানানসই উপাদান। শীতকালের দিকে তাকালে দেখবেন আমাদের বেশিরভাগ মিষ্টি খাবার যেমন বিভিন্ন ধরনের পিঠা, পায়েস, নাড়ু ইত্যাদি তৈরিতে গুড় বেশি ব্যবহৃত হয়।
অপরদিকে গরমের সময় বা গৃষ্ম কালীন মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন সর্বোচ্চ চা-কফি লাচ্ছি ফালুদা ইত্যাদিতে চিনি ব্যবহার করা হয়ে থাকে কেননা এ সময় তিনি একটি মানানসই খাবারই। এরপরও আপনি স্বাদ চেখে দেখতে চাইলে কোনো কোনো খাবারে চিনির পরিবর্তে গুড় ব্যবহার করে দেখতে পারেন। তবে আপনি চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু তা কখনো আপনার মুখের স্বাদ হয়তো পরিবর্তন করতে পারবে না।