বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে এই কিডনি প্রতিস্থাপনের ফলে এক মৃতদেহ থেকেই আলো ফুটেছে দুই প্রাণে। এটা দেশে প্রথমবারের মতো ব্রেন ডেথ রোগীর শরীর থেকে নেওয়া দুটি কিডনি দুইজনের শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন (ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট) করা হয়েছে। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকে কিডনি অপারেশন থিয়েটারে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সার্বিক নির্দেশনায় এ কিডনি প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
জানা গেছে, ২০ বছর বয়সী সারা ইসলাম নামক এক ব্রেন ডেথ নারীর শরীর থেকে নেওয়া দু’টি কিডনি দুজন কিডনি রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বিএসএমএমইউ একটি কিডনি মিরপুরের বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী শামীমা আক্তারের দেহে প্রতিস্থাপন হয়েছে। অন্য কিডনি ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনে আরেক নারীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। একইসঙ্গে সারা ইসলাম তার দুটি কর্নিয়াও দান করেছেন।
কিডনি ও কর্নিয়া দানকারী সারা ইসলামকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অঙ্গদানের কাজে উদ্বুদ্ধ করেন বিএসএমএমইউয়ের ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুজ্জামান সজীব।
বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অঙ্গদাতা সারা ইসলাম ১০ মাস বয়সে দুরারোগ্য টিউমার স্কেলেলিস রোগে আক্রান্ত হন। এ রোগের সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াই করেন তিনি। এই রোগ নিয়ে লড়াই করা অবস্থায় সারা ইসলাম অগ্রণী গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি এবং হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভে (ইউডা) ফাইন আর্টসে ভর্তি হন। সারা ইসলাম ফাইন আর্টসের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় বিএসএমএমইউয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে প্রয়াত সারা ইসলামের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাজায় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শরীক হন।
এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রথম অঙ্গদাতা সাহারা ইসলামের নাম বাংলাদেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তার এই মহৎ আত্মত্যাগের মহিমা চিকিৎসা বিজ্ঞানে ভাস্মর হয়ে থাকবে।