২৬ মার্চ ২০২৩, রবিবার, ০৩:৩৪:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
আরাভ খানকে আটকের তথ্য জানা নেই, জানালেন আইজিপি হাসপাতালের টয়লেটে নবজাতক রেখে পালিয়ে গেছে এক মা, শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজক বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা ৫৫ কেজি গাঁজা-৪০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই ব্যবসায়ী গ্রেফতার খালার জানাজা শেষে বাড়ি ফেরার পথে প্রাণ গেল আপন দুই ভাইয়ের ফেসবুকে প্রেম, ৭১ বছরে এসে বিয়েটা করেই ফেললেন অধ্যাপক শওকত আলী যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর আঘাত, নিহত হয়েছেন প্রায় ২৩ জন আ’লীগ নেতাকর্মীদের ইফতার মাহফিল না করার নির্দেশ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জুমার নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে আ.লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
দেশের ৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ মানসিক নির্যাতনে নীরবে কাঁদছে
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২৩-০১-২৭
দেশের ৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ মানসিক নির্যাতনে নীরবে কাঁদছে দেশের ৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ মানসিক নির্যাতনে নীরবে কাঁদছে

বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত পুরুষ নির্যাতন বেড়েছে বলে দাবি করছে বাংলাদেশ ম্যান’স রাইটস ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন। সংগঠনটির দাবি, শারীরিক নির্যাতনের তুলনায় মানসিক নির্যাতনের বেশি শিকার হচ্ছেন পুরুষরা। 

এদিকে লোকলজ্জাসহ নানা কারণে এসব ঘটনা অধিকাংশ পুরুষ চাপা পড়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভুক্তভোগী পুরুষ বাধ্য হয়ে নির্যাতনের কথা শিকার করেছেন।আর সেসব অভিযোগের ভিত্তিতে জরিপ চালিয়েছে বাংলাদেশ ম্যান’স রাইটস ফাউন্ডেশন।

ফাউন্ডেশনটি দাবি, সারা দেশে ৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও সারা দেশে গত এক বছরে ৭৯২ জন পুরুষ শারীরিক ও মানসিক উভয় নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।পুরুষদের নির্যাতন দমনে দেশে কোনও আইন নেই বলে এই নির্যাতন বেড়ে চলেছে দাবি করে বাংলাদেশ ম্যান’স রাইটস ফাউন্ডেশন। 

তবে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের বিষয়ে তাদের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ আসছে। তবে লোকলজ্জা, সম্মান হানি, সন্তান-পরিজন ও সমাজে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার কথা চিন্তা করে অনেকে মুখ খুলছে না। 

জরিপ বলছে ২০২২ সালে সারা দেশে ৭৯২টি, ২০২১ সালে সারা দেশে ৪৫০টি, ২০২০ সালে সারা দেশে ৩৩০টি, ২০১৯ সালে সারা দেশে ২৪০টি পুরুষ নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে।তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক গুণ বেশি বলে দাবি করছে সংস্থাটি।

ফাউন্ডেশনটির চেয়ারম্যান শেখ খায়রুল আলম বলেন, ‘আমরা নারী-পুরুষ সমতা চাই। দেশে আইন আছে, কিন্তু একচেটিয়া। এই আইনে পুরুষদের প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা হয়েছে। যেমন নারী নির্যাতন আইন। আমরা চাই নারী কিংবা পুরুষ যে নির্যাতিত হোক-না কেন তার যেন বিচার হয়। তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার হোক। এ জন্য নিরপেক্ষ আইন হওয়া দরকার। 

তবে নারী নির্যাতন আইন থাকলেও পুরুষ নির্যাতন আইন নেই। ফলে নারী নির্যাতন আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। এতে অনেক পুরুষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, মিথ্যা মামলার মধ্য দিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে। কিন্তু লোকলজ্জা ও সম্মান হানির ভয়ে অনেকে তা বলতে পারছে না, নীরবে কাঁদছে।

এদিকে সংগঠনের পক্ষ থেকে জরিপ করে দেখা যায়, দেশে ৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অনেক পুরুষ এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে পুরুষ নির্যাতন রোধে কোনও আইন নেই। এর থেকে উত্তরণের কোনও সুযোগ নেই তাই পুরুষ নির্যাতন দমন আইনের দাবি করে আসছে সংগঠটি।

নারীদের পক্ষে থাকা একটি আইনের ধারা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দণ্ডবিধি ৪৯৭ ধারায় আছে, এক জনের স্ত্রী আরেক ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমে আসক্ত হলে, ওই নারী দায়মুক্ত আর পুরুষের পাঁচ বছরের জেল-জরিমানা হবে। অথচ এখানে দুজনই সমান অপরাধী, কিন্তু শাস্তি পাচ্ছে পুরুষ। এটা কেন? এ কারণে আমার সংগঠনের পক্ষ থেকে চাই, ধারাটি সংশোধন করা হউক।

অন্যদিকে আমাদের সমাজে নারী নির্যাতন বাড়ছে গাণিতিক হারে। আর পুরুষ নির্যাতন বাড়ছে জ্যামিতিক হারে।সেটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বিয়েতে মোটা অঙ্কের দেনমোহর দেওয়ার কারণে পুরুষ নির্যাতন বেশি হচ্ছে। বর্তমানে একজন সামান্য মুদি দোকানি বিয়ে করতে গেলে ৪-৫ লাখ টাকা দেনমোহর দিতে হয়। আর বিয়ের পর দেনমোহরের টাকাসহ নানা ইস্যু নিয়ে নারীরা পুরুষদের ওপর মানসিক নির্যাতন শুরু করে। অনেক সময় শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

তবে এমন ঘটনার বিষয়ে পুলিশের কাছে বলেও কোনও সমাধান হচ্ছে না, উল্টো হাসি-ঠাট্টার শিকার হচ্ছেন। কিন্তু এই অভিযোগ যদি একজন নারী করতো তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। এ ছাড়াও পরকীয়া, স্যাটেলাইট চ্যানেলের নেতিবাচক প্রভাবের ফলে পুরুষ নির্যাতন বাড়ছে।

বর্তমানে আইন নারীদের পক্ষে। এর কারণ হলো- আগে ৯৯ শতাংশ পুরুষ খারাপ ছিল। নারী নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটতো। আইনের কারণে সেটা আগের তুলনায় কমেছে। আর পুরুষ নির্যাতনের বিষয়টা সেই তুলনায় অনেক কম বলা চলে। তবে কিছু কিছু অসাধু নারী এই আইনের অপব্যবহার করছে। তারা কাবিনের টাকা পাওয়ার জন্য মামলা করে থাকে। তবে এই সংখ্যা অতি নগণ্য।

এদিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মনিরুজ্জামান বুলবুল এর বক্তব্যে উঠে আসে, ‘নারী-পুরুষ উভয়কে সমান অধিকার দেওয়া উচিত। বর্তমান আইন ব্যবস্থার ফলে অনেক নারী মিথ্যা মামলা দিয়ে পুরুষদের হয়রানি করতে পারেন। সব নারী খারাপ নয়, তাদের মধ্যে ভালো-খারাপ রয়েছে। প্রকৃত নারী নির্যাতনের বিষয়গুলোকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে অনেক নারী বিয়েতে বেশি টাকা কাবিন করিয়ে থাকে। পরে সেই টাকা আদায়ের জন্য মামলা দিয়ে হয়রানি করে টাকা আদায় করে। অনেক সময় উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলা দেওয়া হয়। এ কারণে অনেক সময় মিথ্যা মামলার আড়ালে সঠিক বা প্রকৃত মামলাগুলো হারিয়ে যায়।

সুতরাং পুরুষের ক্ষেত্রেও আইন করা দরকার। যাতে পুরুষরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, হয়রানির শিকার না হয়। ফলে আইন পরিবর্তন নয়, আইন কিছুটা মার্জিত করা দরকার।


শেয়ার করুন