আজ মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহিদ দিবস। বাংলাদেশের নানা প্রান্তে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন নানান স্তরের মানুষ।
শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার পাশাপাশি মোবাইল ফোনের মাধ্যামে খুদেবার্তা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস শেয়ার করে অনেকেই ভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
কিন্তু আমরা বাংলা ভাষার ব্যাকরণগত কিছু নিয়ম জেনে-না জেনে (বুঝে-না বুঝে) মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে কিছু ভুল করে থাকি। একে ব্যাকরণের ভাষায় বলা হয় ‘ভাষার অপপ্রয়োগ’। সমষ্টিগত অপপ্রয়োগ: ভাষা দিবসে আমরা একটি বাক্য ব্যাবহার করে থাকি।
বাক্যটি হলো- ‘সকল ভাষা শহিদদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা’। এই বাক্যটি ভুল। সকল ও শহিদদের একই বাক্যে থাকাটা সামঞ্জস্য নয়। দুটি শব্দের অর্থই একাধিক ব্যক্তিকে নির্দেশ করে। একটি বাক্যে একাধিক একই অর্থের শব্দ বসতে পারে না।
তাই, বাক্যটি হবে-সব ভাষা শহীদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা অথবা ভাষা শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। বানান ভুল: মহান শহিদ দিবসে আমরা অনেকেই ব্যানার ফেস্টুন বানাই ও শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করি। যেখানে আমরা ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শব্দটি অনেকে ‘শ্রদ্ধাঞ্জলী’ লিখি। এটা ভুল। সঠিক বানান হবে ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’।
এ বিশেষ দিনের আলোচনা সভায় উপস্থিত অতিথিদেরকে ‘স্বাগতম জানাই’ শব্দটিও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। উক্ত শব্দটিও ভুল। সঠিক শব্দটি হলো, স্বাগত জানাই/জানাচ্ছি।
তাছাড়া, শহিদ বেদিতে জুতা নিয়ে উঠা, শহিদ মিনারের পেছন অংশে জুতা পরে দাঁড়িয়ে ব্যক্তিবর্গের ছবি তোলা, প্রভাত ফেরিতে জাতীয় সংগীত হেঁটে হেঁটে ও বুকে হাত দিয়ে গাওয়া এবং ভিনদেশি গান বাজিয়ে উল্লাস সহ আরও অনেক ভুল আমরা এদিনে করে থাকি।
ভাষার প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ আগেও ছিল এখনো আছে। ভবিষ্যতেও হয়তো থাকবে। সামান্য অসচেতনতায় ব্যাকরণগত ভুল ব্যবহারের কারণে ভাষাকে করা হয় অশুদ্ধ। ভাষার শুদ্ধ প্রয়োগের মাধ্যমেই বাংলা ভাষাকে সম্মান প্রদর্শন করা হয়।
বাংলা ভাষাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়, শুদ্ধ বলে বা লেখে। ব্যাকরণজ্ঞান থাকলে ভাষার অশুদ্ধ প্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ অর্থাৎ অপপ্রয়োগ সম্পর্কে সচেতন থাকা যায়। লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ।