বিজ্ঞানীরা মূলত এডিয়াকারান যুগের ৫৫ কোটি বছর পুরনো একটি প্রাণীর ফসিল বা জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করেছেন। ওই বিশ্লেষণে জীবাশ্মের মধ্যে খাবারের নমুনা পাওয়া গেছে যা এ ধরনের প্রাণীরা ৫৩ কোটি ৮০ লাখ বছর থেকে ৬৩ কোটি ৫০ লাখ বছর আগে খেত।
পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি ও এ সম্পর্কিত নানা বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যদিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো প্রাণী কি ও তারা দেখতে কেমন তা জানার চেষ্টা করছেন তারা। অনেকটা সফলও হয়েছেন গবেষকরা। এরই ধারাবাহিকতায় এবার পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো প্রাণীরা কী খেয়ে জীবনধারণ করত সে সম্পর্কে সম্মক ধারণা পেয়েছেন বলে মনে করছেন একদল গবেষক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরনো ওই জীবাশ্মের মধ্যে অ্যালগি ও ব্যাকটেরিয়ার মতো উপাদান মিলেছে যা সাধারণত সাগরতলে পাওয়া যায়। গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল কারেন্ট বায়োলজিতে প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জোকেন ব্রকস বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে গবেষণায় যে ফসিল বা জীবাশ্মটি ব্যবহার করা হয়েছে, তা বিবর্তনের ধারায় এ যাবৎকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফসিলগুলোর অন্যতম। এটা আমাদের দেখা সবচেয়ে পুরনো প্রাণীর বড় ফসিলগুলোরও একটি।
তাঁর মতে, প্রাণীটির অন্ত্র ছিল। তার ভাষায়, ‘অন্ত্র থাকা খুবই আধুনিক ব্যাপার। স্পঞ্জ, কোরাল বা প্রবাল ও জেলিফিশের মতো প্রাণীর স্বাভাবিক অন্ত্র নেই।’ গবেষণার প্রধান লেখক ড. ইলিয়া ববরোভস্কির মতে, এডিয়াকারান যুগের জীবাশ্মটির অন্ত্রে যেসব জীব পাওয়া গেছে তা এডিয়াকারান থেকে প্রাণীর ক্যামব্রিয়ান যুগে উত্থান ও আধুনিক প্রাণীর উত্থানের প্রমাণ বহন করে।’
বিজ্ঞানীরা যে ফসিলটি নিয়ে গবেষণা করছেন সেটা আবিস্কৃত হয় রাশিয়ায় এক পাহাড়ের ঢালে। এ ধরনের আরও বেশি কিছু ফসিল গবেষক ড. ইলিয়া ববরোভস্কির সংগ্রহে রয়েছে। অদ্ভুত উপবৃত্তাকার এই জীবাশ্ম নাম দেয়া হয় ডিকিনসনিয়া।
প্রসগত, এখন থেকে প্রায় ৫৬ কোটি বছর আগে এই প্রাণী দাপটের সঙ্গে পৃথিবীতে ঘোরাফেরা করত। জীববিজ্ঞানের ভাষায় সেটি ছিল এডিকারান যুগ। মনে করা হয়, এই যুগেই পৃথিবীতে প্রথম বহুকোষী বৃহদাকৃতির প্রাণীর আগমন ঘটে।