ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধের ফলে শস্য চুক্তির মেয়াদ নবায়নে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। চুক্তি নবায়ন না হলে বেশি বিপদে পড়বে বাংলাদেশ, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে, ইউক্রেন রাশিয়ার শস্য চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৮ মার্চ।রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়া। এতে শস্য চুক্তি নবায়ন করতে নারাজ দেশটি। চুক্তি নবায়নে দেশটি নতুন শর্ত দিয়েছে ।
শর্তে রাশিয়া বলছে, রফতানিতে আর্থিক লেনদেন, অবকাঠামো ও বিমার ওপর নিষেধাজ্ঞায় বিশ্ববাজারে রাশিয়ার শস্য ও সার রফতানিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, প্রবেশের সুযোগ দেয়া হলে চুক্তিতে ফিরবে রাশিয়া।
গত বছরের ১ আগস্ট আগের চুক্তি কার্যকরের পর থেকে চলতি বছরের ১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ১১টি জাহাজে ৬ লাখ টন গম আমদানি করেছে। ইউক্রেনের মোট গম রফতানির ১০ শতাংশ এসেছে বাংলাদেশে।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গম আমদানিতে স্পেন ও তুরস্কের পরই রয়েছে বাংলাদেশ। চুক্তির আওতায় শস্য আমদানিতে বাংলাদেশের অবস্থান এখন পর্যন্ত অষ্টম। এ সময় বিশ্বের ৪৫টি দেশ ইউক্রেন থেকে ২ কোটি ২৭ লাখ টন শস্য আমদানি করেছে। মোট শস্যের মধ্যে ইউক্রেন গম রফতানি করেছে ৬৩ লাখ টন।
প্রসঙ্গত, দেশের মোট আটা তৈরির গমের একটি মোটা অংশ আমদানি করা হত ভারত থেকে। তবে বিধিনিষেধের কারণে গত বছর নভেম্বরের শুরুতে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হওয়ায় গমের এখন অন্যতম বড় উৎস ইউক্রেন।তবে রাশিয়া চুক্তিতে না থাকলে ইউক্রেন থেকে আমদানির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।
এদিকে রাশিয়া থেকে আমদানিতে ঋণপত্র খুলছে না ব্যাংকগুলো। এতে বাংলাদেশেও গমের সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে সম্প্রতি দেশে কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে আটার দাম।
কোনো কারণে চুক্তি নবায়ন না হলে কম দামে আটা তৈরির গম যেমন মিলবে না তেমনি সরবরাহেও বাধা আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।দেশের প্রায় ৭০ ভাগ গম আসে ইউক্রেন থেকে। তাই যে কোনো মূল্যে এ চুক্তির নবায়ন করতে হবে এমনটা মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এজন্য ব্যাংকগুলোকে এলসি খোলার আহবান বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি বাংলাদেশকে রাশিয়ার সাথে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে তাগিদ তাঁদের।
এদিকে, গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলা শুরুর পর ইউক্রেন থেকে শস্য রফতানি বন্ধ হয়ে যায়।এতে খাদ্যসংকট তৈরির শঙ্কা দেখা দিলে গত বছরের ২২ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের তিনটি বন্দর দিয়ে নিরাপদে শস্য রফতানিতে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়। চুক্তির পর গত বছরের ১ আগস্ট ইউক্রেন থেকে শস্য রফতানি শুরু হয়। গত বছরের ১৭ নভেম্বর চার মাসের জন্য একদফা নবায়ন হয়। যা শেষ হবে চলতি মাসের ১৮ মার্চ।
।