০৫ জুন ২০২৩, সোমবার, ০১:৪৯:০৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
অভিজ্ঞতা ছাড়াই দারাজে পার্ট টাইম চাকরি, ৩০০ জনকে নিয়োগ তীব্র দাবদাহর কারনে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা লাইভে এসে পরীমণির স্বামী রাজ যা বললেন নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম কমেছে হবিগঞ্জে বাস অটোরিকশার সংঘর্ষে ৩ জন নিহত, আহত অনেকেই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় যেসব খাবার, কিছু খাবার ফিটনেস ও হার্টের জন্য ভালো নয় আমের রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ এখন পূর্ণ মৌসুম পরিবেশ বাঁচাতে অবৈধ স্মার্ট পণ্য আমদানিতে কঠোর পদক্ষেপ দাবি, বিআইজেএফ বর্তমানে দেশে ১৭০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং চলছে, নসরুল হামিদ প্রথমবারের মতো বন্ধ হচ্ছে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন
দেশের ২০ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জোড়াতালি দিয়ে চলছে
ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২৩-০৫-০৪
দেশের ২০ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জোড়াতালি দিয়ে চলছে

দেশের ২০ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জোড়াতালি দিয়ে চলছে।  বর্তমানে সারাদেশে ১০৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় জোড়াতালি দিয়ে তাদের কার্যক্রম চলছে। 

এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নেই, নেই শিক্ষার্থীও। অবকাঠামো নেই; তবুও চলছে বিশ্ববিদ্যালয়। রাজনৈতিক বলয় আর বাণিজ্যিক মানসিকতা থেকে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা এসব বিশ্ববিদ্যালয় চলছে কোচিং সেন্টারের আদলে।

মাত্র তিন দশকের কিছু বেশি সময় আগে গবেষণানির্ভর শিক্ষাপ্রক্রিয়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হলেও এসব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ যেন সনদ বিক্রির বৈধ প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে!

অদক্ষ শিক্ষক, মনগড়া টিউশন ফি, নামমাত্র গবেষণা, লোক দেখানো বাণিজ্যিক ওয়ার্কশপ-সেমিনার, নিয়ম বহির্ভূত সিটিং অ্যালাউন্স গ্রহণ আর উন্নয়নের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় বিদেশ ভ্রমণ যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে শিক্ষক সংকট, গবেষণায় অনীহা আর নানা অব্যবস্থাপনায় মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রায় ২০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়। 

বর্তমানে দেশে সরকার অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০৮টি এর মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ৯৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম চলমান রয়েছে।

অপরদিকে, মোটা অঙ্কের বিনিময়ে সনদ বিক্রি এবং নানা অনিয়মের অভিযোগে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের। এছাড়া অনুমোদন থাকলেও দীর্ঘদিন শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করতে না পারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা এখন ছয়টি।

অদক্ষ শিক্ষক, মনগড়া টিউশন ফি, নামমাত্র গবেষণা, লোক দেখানো বাণিজ্যিক ওয়ার্কশপ-সেমিনার, নিয়ম বহির্ভূত সিটিং অ্যালাউন্স গ্রহণ আর উন্নয়নের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় বিদেশ ভ্রমণ যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

শিক্ষক সংকট, গবেষণায় অনীহা আর নানা অব্যবস্থাপনায় মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রায় ২০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০টিতে নেই উপাচার্য, প্রায় ৭৫টি বিশ্ববিদ্যালয় চলছে উপ উপাচার্য ছাড়া এবং ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্য রয়েছে কোষাধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ।

তবুও বছর বছর যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয়।

এ যেন কোচিং সেন্টারের আদলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কারখানা! কেন এমন দশা? শিক্ষাবিদরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পাঁচ দশকের অক্ষমতা, মনিটরিংয়ের অভাব, বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যিক মানসিকতা, উপাচার্য, উপউপাচার্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে জনবল নিয়োগ না দেওয়া, পর্যাপ্ত শিক্ষক সংকট, মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়া, মনগড়া নিয়মে উচ্চ টিউশন ফি আদায়, শিক্ষক নিয়োগে নানা অনিয়মে দেশের বেসরকারি উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে এমন সংকট দেখা দিয়েছে।


ইউজিসির ক্ষমতায়ন, মনিটরিং বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকারের নিবিড় সম্পৃক্ততা ও অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গতিশীল করতে না পারলে এ সংকট আরও বাড়বে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা। তাদের মতে, দেশে মাত্র ১৫ থেকে ২০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভালো করছে। বাকিগুলোর শিক্ষার মান খারাপ।

কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে। কেউ কেউ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে পৈত্রিক বাগানবাড়িতে রূপ দিয়েছেন। এ সমস্যা থেকে বের হতে নামসর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সতর্কতা এবং নির্দেশনা না মানলে বন্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে। 

উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই আজ যেন সনদ বিক্রির বৈধ প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে— বলছেন সংশ্লিষ্টরা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০১০ অনুযায়ী অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই তাদের মানদণ্ড ঠিক রাখতে পারছে না।

এসব বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ শিক্ষায় তেমন কোনো অবদান রাখতে পারবে না বলেও মত তাদের। ইউজিসির এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৭ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৫৪ হাজারের কিছু বেশি।

তখন বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ৯৫টি। ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় বেড়ে হয় ১০৮টি। শিক্ষার্থী কমে দাঁড়ায় তিন লাখ ১০ হাজারে। অপরদিকে, শিক্ষকও কমেছে। ২০১৭ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ২০।

২০২১ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৩৯৩ জনে। এটা উচ্চ শিক্ষার বড় ধরনের দুরবস্থা। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন আছে। সেখানে বলা আছে কী কী নিয়মনীতি মানতে হবে। কীভাবে এগুলো পরিচালিত হবে তাও বলা আছে।

কিন্তু এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আমাদের মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি কী দায়িত্ব পালন করছে— সেটাই এখন বড় প্রশ্ন অধ্যাপক মনজুর আহমেদ ইউজিসির সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের ১০৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় জোড়াতালি দিয়ে চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- ফরিদপুরের টাইমস ইউনিভার্সিটি ১০ বছর আগে যাত্রা শুরু করা ফরিদপুরের টাইমস ইউনিভার্সিটি চলছে মাত্র ১৫ জন শিক্ষক দিয়ে। নিজস্ব জমির ওপর ক্যাম্পাস স্থাপনের নিয়ম থাকলেও ২৮ হাজার বর্গফুটের ভাড়া বাসাতে বিশ্ববিদ্যালয়টি তাদের শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে।

৪০০ আসনের অনুমোদন থাকলেও মাত্র ১৭১ শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বার্ষিক নিজস্ব আয় প্রায় ৬০ লাখ টাকা দেখালেও বিদেশি/অন্যান্য উৎস হতে আয় রয়েছে আরও ৫৯ লাখ টাকা।

সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি ৩০ বছর আগে যাত্রা শুরু করা রাজধানীর সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি চলছে মাত্র ৩৮ জন শিক্ষক নিয়ে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি বিভাগের বিপরীতে তিন হাজার আসনের অনুমোদন থাকলেও শিক্ষার্থী আছেন মাত্র ৯৩ জন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ গবেষণা হলেও ৩০ বছরের এ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা খাতে এক টাকাও বরাদ্দ নেই! বর্তমানে দেশে সরকার অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০৮টি।

এর মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ৯৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম চলমান। অপরদিকে, মোটা অঙ্কের বিনিময়ে সনদ বিক্রি এবং নানা অনিয়মের অভিযোগে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের।

এছাড়া অনুমোদন থাকলেও দীর্ঘদিন শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করতে না পারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা এখন ছয়টি নেই দেশি-বিদেশি সাময়িকীতে প্রকাশিত প্রবন্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়টির বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৩৯৬ লাখ টাকা। বিদেশি ও অন্যান্য উৎস থেকে আয়ও রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

শেয়ার করুন