০৫ জুন ২০২৩, সোমবার, ০২:২৩:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
অভিজ্ঞতা ছাড়াই দারাজে পার্ট টাইম চাকরি, ৩০০ জনকে নিয়োগ তীব্র দাবদাহর কারনে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা লাইভে এসে পরীমণির স্বামী রাজ যা বললেন নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম কমেছে হবিগঞ্জে বাস অটোরিকশার সংঘর্ষে ৩ জন নিহত, আহত অনেকেই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় যেসব খাবার, কিছু খাবার ফিটনেস ও হার্টের জন্য ভালো নয় আমের রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ এখন পূর্ণ মৌসুম পরিবেশ বাঁচাতে অবৈধ স্মার্ট পণ্য আমদানিতে কঠোর পদক্ষেপ দাবি, বিআইজেএফ বর্তমানে দেশে ১৭০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং চলছে, নসরুল হামিদ প্রথমবারের মতো বন্ধ হচ্ছে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন
নিজে একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও থাকেন জরাজীর্ণ ঘরে, পারভীনের মানবেতর জীবন
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২৩-০৫-২৫
নিজে একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও থাকেন জরাজীর্ণ ঘরে, পারভীনের মানবেতর জীবন

নিজে একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও থাকেন জরাজীর্ণ ঘরে। জরাজীর্ণ ঘরে থাকেন নারী ইউপি সদস্য পারভীন আক্তার স্বামীহারা পারভীন আক্তার। পার্বত্য খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির বাটনাতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা তিনি। জনপ্রতিনিধি হয়েও জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস তার। যেকোনো বিপদ-আপদে মানুষের পাশে ছুটে গেলেও নিজের ঘরের চুলায় তিন বেলা আগুন জ্বালাতে পারেন না।

তার এমন দুর্দশার কথা শুনে পাশে দাঁড়িয়েছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তিন বেলা চুলা জ্বলে না পারভীন আক্তারের ঘরে। গ্রাম থেকে কম দামে সুপারি কিনে হাট-বাজারে এনে বিক্রির পাশাপাশি রাতে দোকান-পাট বন্ধের পর ফেলনা কাগজ, কার্টন কুড়িয়ে ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করতেন। যা টাকা পেতেন তা দিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে কোনোরকম চলতেন।

একসময় বড় ছেলে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে আবাস গড়েন। এরপর থেকেই স্কুলপড়ুয়া ছোট ছেলেকে নিয়ে এক শতক খাস জমিতে কুঁড়ে ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করেন তিনি। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক ছিল পারভীন আক্তারের। যেকোনো বিপদ-আপদে মানুষের পাশে পাশে ছুটে যেতেন।

রই পুরস্কার স্বরূপ ২০২১ সালের মানিকছড়ির বাটনাতলী ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। এ যেন পারভীন আক্তারের জন্য অমাবস্যার চাঁদ পাওয়া ছিল। জনপ্রতিনিধি হলেও নিজের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। বরং তার দুঃখ ভরা জীবনে দুর্গতি বেড়েছে। এখনো তার ঘরে তিনবেলা চুলা জ্বালাতে পারেন না।

খেয়ে না খেয়ে নিঃস্বার্থভাবে হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে ভুলেননি তিনি। তার দুর্বিষহ জীবনের কথা জানতে পারেন মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রক্তিম চৌধুরী। সরেজমিনে বিষয়টির সত্যতা পাওয়ার পর খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামানের দৃষ্টিগোচরে আনেন ইউএনও। বিষয়টি জানার পর জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান নিজস্ব তহবিল থেকে পারভীন আক্তারের জন্য ঘর নির্মাণের ঘোষণা দেন।

মানিকছড়ি ইউএনও রক্তিম চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, জনপ্রতিনিধি হলেও পারভীন আক্তার একজন প্রকৃত হত-দরিদ্র মানুষ। আর্থিক অভাব অনটনে দিন কাটালেও দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বিষয়টি লোকচক্ষুর আড়াল করেছিলেন। সম্প্রতি তার মানবেতর জীবন-যাপনের কথা জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। তিনি নিজস্ব তহবিল থেকে পারভীন আক্তারকে একটি ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দ্রুত ঘর করে দেবেন। বিজ্ঞাপন ঘর পাওয়ার ঘোষণায় আপ্লুত ইউপি সদস্য পারভীন আক্তার।

তিনি বলেন, নিজের একটি ঘর হবে তা কখনো ভাবতে পারিনি। একটি ঘর হলে খেয়ে না খেয়ে ছেলেকে নিয়ে অন্তত মাথার ওপর একটা ছাদ থাকবে। নিজের অভাব-অনটনের কথা কখনো কাউকে বুঝতে দেননি জানিয়ে পারভীন আরও বলেন, সব কষ্ট সহ্য করেছি। কিন্তু সব কষ্ট তো আর লুকিয়ে রাখা যায় না। তবে অভাবের কারণে বন্ধক দেওয়া রেশন কার্ডটি ছাড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন