ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সহ বিভিন্ন অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ করে আবারো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ইউক্রেনের অনেকাংশ পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০% পর্যন্ত ব্যবহার বিদ্যুৎ কমেছে দেশের বাসিন্দারা। এর আগে ১০ ই অক্টোবর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সহ বিভিন্ন অঞ্চলে ৮০ টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়ান সেনাবাহিনী। সেদিন থেকে বৈদ্যুতিক অবকাঠামোগুলো ধ্বংস করার জন্য দেশটিতে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। এক্ষেত্রে রাশিয়া ব্যাপকহারে ক্ষেপণাস্ত্র ও আলোচিত কামিকাজি ড্রোন ব্যবহার করছে। হামলায় দেশটির বিদ্যুৎ-ব্যবস্থার প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী শনিবার সকালে তেত্রিশটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে রাশিয়া। এর মধ্যে ১৮ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে তারা। ছবিটিতে দেখা যায়, একটি জঙ্গলের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। এই পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, কিয়েভের আকাশে একটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। সেটির ধ্বংসাবশেষই ওই জঙ্গলে গিয়ে পড়ে।
ইউক্রেনে জাতীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মূলত পশ্চিম ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক অবকাঠামোগুলো লক্ষ করে ছোড়া হয়েছে। সর্বশেষ ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের পশ্চিমে অবস্থিত বৈদ্যুতিক অবকাঠামোতে আঘাত হানলে কিভাবে সহ দেশের ১০ টি অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধার মুখে পড়েছে। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সহ অনেক অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা।
এরই মধ্যে ইউক্রেনের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ইউক্রেনেরগো। ধন্যবাদ জানিয়ে আজ ইউক্রেনেরগোর প্রধান ভলোদিমির কুদরিতস্কি বলেন, দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুতের ব্যবহার ৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে। পরিমাণটা উল্লেখযোগ্য, তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে যথেষ্ট নয়।
পশ্চিমা দেশগুলো দাবি করছে ইউক্রেনে হামলা চালানোর জন্য রাশিয়া-ইরানের কামিকাজি ড্রোন ব্যবহার করছে। এরই জের ধরে গত সপ্তাহে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলো। তবে মস্কোকে এসব কামিকাজি ড্রোন সরবরাহের অভিযোগ আগে থেকেই নাকচ করে আসছে তেহরান। জাতিসংঘের কাছে তদন্তের আবেদনের পর আজ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপ ‘উসকানিমূলক’। দায়িত্বজ্ঞানহীন যেকোনো পদক্ষেপের জবাব দেওয়ার অধিকার রয়েছে তেহরানের।
এদিকে ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে শুক্রবার টেলিফোনে কথা বলেছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।দুই দেশের পক্ষ থেকে আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে কি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। দুই পক্ষই এতটুকু জানিয়েছে, তাঁরা ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করেছেন।