ফুল দেখতে কার না ভালো লাগে ফুল দেখে যেকোনো মানুষের কাছে যেতে মন চায়। ধরতে মনে চায়। কিন্তু পৃথিবীতে এমন একটি ফল আছে যার কাছে যাওয়া মারাত্মক বিপদের কারণ হতে পারে। মাঝারি আকারের একটি গাছ, লাল–সবুজের মিশেলে পাতার রং। লাল টুকটুকে ফুলও ফোটে। তবে সেই ফুল গাছটির কাছে যাওয়া ‘নিষেধ’। কারণটা বেশ অদ্ভুত। দেখতে আকর্ষণীয় হলেও এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত ফুল গাছের তকমা পেয়েছে। গাছটির সংস্পর্শে গেলে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এমনকি ফুল ও বীজ কোনো কারণে পেটে গেলে মৃত্যুও হতে পারে।
বৈজ্ঞানিকভাবে ফুলের নাম রিসিনাস কমিউনিস (Ricinus Communis)। সাধারণ মানুষের কাছে এটি ‘ক্যাস্টর অয়েল প্ল্যান্ট’ নামে পরিচিত। এক গবেষণায় দেখা যায় সায়ানাইড এর যে পরিমান বিষ রয়েছে এর একটি ফুলে তারচেয়ে ছয় হাজার গুণ বেশি বিষ রয়েছে। গাছটির কাণ্ড, পাতা, ফুল—সবই বিষাক্ত উপাদানে ভরা।
গাছটি বিষাক্ত হওয়ার কারণ হল ঋষি নামের এক ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান এই ফুল গাছে প্রচুর পরিমাণ বিষাক্ত রিসিং জাতীয় পদার্থ রয়েছে। তাই গাছটির ফুল পাতা সহ বিষাক্ত। বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা এই গাড়িটির স্পর্শ করা কিংবা পরিচর্যা করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে গ্লাভস এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকে। আর সাধারণ মানুষকে গাছটির সংস্পর্শে যেতে নিষেধ করা হয়। শুধু ওষুধ উৎপাদনে ও চিকিৎসার প্রয়োজনে এই ফুল গাছ ব্যবহার করা হয়।
বিজ্ঞানীদের মধ্যে রিসিনাস কমিউনিসের অত্যধিক মাত্রায় বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে কোন কারণে এর একটি বীজের সামান্য একটু অংশ মানুষ বা অন্য কোন প্রাণীর পেটে গেলে সাথে সাথে অসুস্থ হয়ে পড়বে। মাত্র ১ থেকে ১০টি বীজ খাওয়ার কারণে মৃত্যুও হতে পারে। এরইমধ্যে ফুলগাছটি গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড এ সবচেয়ে বিষাক্ত ফুলগাছ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। গিনেস বুকের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটা এতটাই বিষাক্ত যে এই ফুলের প্রতি ৭০ মাইক্রোগ্রাম বীজ ৭২ বছর বয়সী একজন সুস্থ ও সবল মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি পার্কে ফুল গাছগুলো লাগানো হয়েছে। এরপরই বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের কাছে পুনরায় আবার আলোচনায় আসে। তবে পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সর্তকতা মেনে দর্শনার্থীদের প্রদর্শনীর জন্য গাছগুলো লাগানো হয়েছে। এ থেকে দুর্ঘটনা ঘটার কোন সম্ভাবনা নেই।