সার ডিজেল কীটনাশক বিষ সহ বিভিন্ন ধরনের কৃষি উপকরণের দাম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে কৃষকেরা। ফলে দেশে খাদ্য মজুদ পণ্য উৎপাদন হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অথচ বিভিন্ন পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, বিদ্যমান বৈশ্বিক সংকটের সবচেয়ে বড় প্রভাবটি পড়বে আগামী বছর।
এই খবরটি মাথায় রেখে আমাদের যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব সহকারে লক্ষ্য করা উচিৎ। তা হলো দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এক্ষেত্রে সবার আগে দৃষ্টি দেওয়া। প্রয়োজন দেশের অভ্যন্তরীণ কৃষি ব্যবস্থার উপর। এতে করে দেশের অভ্যন্তরীণ খাদ্য পণ্য উৎপাদন বাড়বে।
এজন্য সরকার ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। ষকের হাতে সঠিক সময়ে বীজ, সার, কীটনাশক ও জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি যেসব খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয়, সেগুলোও যথাসময়ে দেশে পৌঁছানো প্রয়োজন। এসব বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনাও দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হয়নি। অনুসন্ধানে কৃষকের দুর্দশার ভয়াবহ চিত্র পাওয়া গেছে। কৃষি উপকরণের অস্বাভাবিক মূল্যের কারণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সেই সঙ্গে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যার প্রভাব পড়বে ভোক্তা পর্যায়ে।
এ অবস্থায় অতি দ্রুত সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এই খাতে নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করি আমরা। বিশেষ করে সার, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ ও কৃষিবিদরা। উন্নত কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সবার আগে প্রয়োজন কৃষকদের চাষাবাদে উৎসাহিত করা। কিন্তু দেশে কৃষি পণ্য বিপণনের যে ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তাতে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং চাষাবাদে নিরুৎসাহিত করছে।
সরকারের কৃষি খাতে এত পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরও কৃষকরা উৎপাদিত পণ্যের দাম পান তা অনেক সময় খরগোশের সমান হতে চায় না। লাভ হয় মূলত মধ্যস্বত্বভোগীদের। এ অবস্থায় চলে আসছে যুগের পর যুগ থেকে। বর্তমানে দেশে যখন খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। তখন বিপণন ব্যবস্থা একটা পরিবর্তন আনা উচিত। কেননা এতে করে কৃষকরা চাষাবাদ ও উৎসাহিত হবে এবং তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবে। তেমনি উপকৃত হবেন ভোক্তারাও। কাজেই কৃষি উপকরণে প্রয়োজনীয় ভর্তুকি প্রদান; খাদ্যপণ্য, জ্বালানি ও সার আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খোলা-এসব বিষয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।