২৬ মার্চ ২০২৩, রবিবার, ০৩:০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
আরাভ খানকে আটকের তথ্য জানা নেই, জানালেন আইজিপি হাসপাতালের টয়লেটে নবজাতক রেখে পালিয়ে গেছে এক মা, শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজক বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা ৫৫ কেজি গাঁজা-৪০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই ব্যবসায়ী গ্রেফতার খালার জানাজা শেষে বাড়ি ফেরার পথে প্রাণ গেল আপন দুই ভাইয়ের ফেসবুকে প্রেম, ৭১ বছরে এসে বিয়েটা করেই ফেললেন অধ্যাপক শওকত আলী যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর আঘাত, নিহত হয়েছেন প্রায় ২৩ জন আ’লীগ নেতাকর্মীদের ইফতার মাহফিল না করার নির্দেশ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জুমার নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে আ.লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
বিজয় বার্তা : ২২ নভেম্বর, ১৯৭১
সাইফুল ইসলাম মুন্না
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২২-১১-২২
বিজয় বার্তা  : ২২ নভেম্বর, ১৯৭১

দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা।

 প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশপ্রেমী মানুষদের এসব দেখ সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য আমাদের আয়োজন বিজয় বার্তা ১৯৭১। 

এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিদিনের ঘটনা আমরা পাঠকদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করি।   মুক্তিযুদ্ধের আজকের দিনে (২২ নভেম্বর) ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার বিবরণ তুলে ধরা হল-

ভারতীয় সীমান্তবর্তী যশোর এর চৌগাছার এলাকাটি মুক্ত করে মুক্তিবাহিনীরা বাইশে নভেম্বর যশোর শহরের দিকে এগোয়। পাকিস্তানি বিমান যশোরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে বয়রায় আসামাত্র ভারতীয় বিমানও আকাশে ওড়ে। এ সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের চলমান বিমান যুদ্ধে ভারতীয় বিমানবাহিনীর জয় লাভ করে এবং পাকিস্তানের তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয় দুই পাইলট খলিল আহমদ খান ও পারভেজ মেহেদি কোরেশি ভারতে বন্দী হন। পাকিস্তানি বাহিনী ১৩টি ট্যাংক, ৩টি বিমান এবং বেশ কিছু সেনা হারিয়ে শার্শার নাভারনে আশ্রয় নেয়। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের পিছু নিয়ে শার্শা সদর পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে সেখানেই ঘাঁটি গাড়ে।

আজকের এই দিনে দুই নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা কসবা রেলস্টেশন থেকে তিন মাইল উত্তরে চন্দ্রপুর পাকিস্তানের একটি ঘাঁটিতে হামলা চালায় এ সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর আর্টিলারি সহায়তা করে। পাকিস্তানি বাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থান সুবিধাজনক স্থানে ছিল। এ সময় চন্দ্রপুরের পাশে অন্য একটি এলাকায় থাকা পাকিস্তানী সেনাবাহিনীরা দ্রুত চন্দ্রপুরে হামলা চালালে বেশ ক্ষতির মুখে পড়ে যৌথ বাহিনীর সেনা। ভারতীয় বাহিনীর একজন কোম্পানি কমান্ডার শিখ মেজর, তিনজন জুনিয়র কমিশন্ড কর্মকর্তাসহ ৪৫ জন সেনা এবং মুক্তিবাহিনীর নবীন সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট খন্দকার আজিজুল ইসলামসহ (স্বাধীনতার পর মরণোত্তর বীর বিক্রম) ২২ জন শহীদ হন। আহত হন প্রায় ৩৪ জন। মুক্তিবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর সহায়তায় গভীর রাতে চন্দ্রপুর দখল করলেও পাকিস্তানি বাহিনী চন্দ্রপুর পুনর্দখল করে নেয়।

এসময় দুই নাম্বার সেক্টর এর আরেকটি দল ঢাকা শহরে গেরিলা অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় তারা ঢাকার বনগ্রাম এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এলাকাটি পাকিস্তান সমর্থক হওয়ায় তাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয় । এ সময় মুক্তিবাহিনীরা রামপুরার একটি এলাকায় গেরিলা হামলা চালালে পাকিস্তান বাহিনীর একজন সদস্য গুরুতর আহত হয় এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। 

৪ ও ৫ নম্বর সেক্টরের সিলেট অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সের প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট আটগ্রাম-কানাইঘাট-চরখাই-সিলেট অক্ষ বরাবর অগ্রসর হচ্ছিল। এদিন তারা সুরমা নদীর তীর ধরে এগিয়ে গৌরীপুরে পৌঁছায়। দলটির আলফা ও ব্রাভো কোম্পানি সুরমার দক্ষিণ তীরে এবং চার্লি ও ডেলটা কোম্পানি সুরমার উত্তর তীরে অবস্থান নেয়।

প্রথম ইস্ট বেঙ্গল গৌরীপুরে পৌঁছালে কানাইঘাটে নিয়োজিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩১ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের আলফা কোম্পানি তাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান ছেড়ে গৌরীপুরে এগিয়ে গিয়ে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সামনের দিকের দুটি কোম্পানিকে ঘিরে ফেলে। প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের চার্লি ও ডেলটা কোম্পানি সুরমার উত্তর তীরে অবস্থান নিয়ে

এসময় সিলেটের চূড়ান্ত হামলা করার জন্য ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের যাতে শক্তিক্ষয় না হয় সেজন্য ৪নম্বর সেক্টরের অধীনে থাকা মুক্তিবাহিনীর চারটি কোম্পানি কে কানাইঘাট দখলের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই সেক্টরের একটি কোম্পানি দরবস্ত-কানাইঘাট রোডে এবং আরেকটি কোম্পানিকে চরখাই-কানাইঘাট রোডে অবস্থান নিতে বলা হয়। তাদের দায়িত্ব ছিল পাকিস্তানিদের শক্তি সঞ্চয়ে বাধা দেওয়া এবং কানাইঘাট থেকে পাকিস্তানিদের পিছু হটতে না দেওয়া। বাকি দুই কোম্পানি সুরমা নদী পেরিয়ে কানাইঘাট আক্রমণের প্রস্তুতি শুরু করে।

এ সময় ৬ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের দুইটা আলাদা হলুদ দলে ভাগ করে একটি দলকে অমরখানা এবং অন্য দল থেকে জগদল হাটে আক্রমণ করার জন্য পাঠানো হয়। এসময় আর্টিলারি এবং বিমান হামলার মাধ্যমে সহায়তা করে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

এ সময় খুলনা অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর বেশ সফলতা অর্জন করেন করে। তারা দ্রুত খুলনা অঞ্চলে সীমান্তবর্তী বসন্তপুরে পাকিস্তানের ঘাঁটি দখল করে আরো দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে।

পশ্চিম পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদপত্রের বরাতে ইত্তেফাক জানায়, কোয়ালিশন দলের প্রধান নুরুল আমিন পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে না গিয়ে স্থায়ীভাবে পশ্চিম পাকিস্তানের লাহোরেই বাস করতে পারেন।পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান শিয়ালকোটে সীমান্ত অঞ্চল এবং লাহোরে নিয়োজিত সেনাদল পরিদর্শন করেন। শিয়ালকোটে সেনাপ্রধান জেনারেল আবদুল হামিদ খান তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

অধিকৃত বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সেনাবাহিনীর স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করেন।

অধিকৃত বাংলাদেশে পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পূর্ব পাকিস্তান সড়ক পরিবহন সংস্থার আন্তজেলা কোচ সার্ভিস অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের ঢাকা ও মফস্বল শহরের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী অভ্যন্তরীণ সার্ভিসও বাতিল করা হয়।

ভারতে সফররত সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান ইউ রাতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেন। ভারত সরকারের সামনে যে কঠিন কর্তব্য রয়েছে, তা শান্তিপূর্ণভাবেই তা সম্পন্ন হবে বলে সেখানে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

দিল্লির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস তাদের এক খবরে বলে ইন্দিরা গান্ধী ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল তা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তার আগেরদিন ১৯নভেম্বর ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানের জনসভায় দেওয়া বক্তৃতায় ভারতের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের করার কথা বলেন।  এ সময় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তা সহজ এবং

শেয়ার করুন