নারী নির্যাতন বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়েরা তাঁদের খুব কাছের মানুষের কাছ থেকেই খুন পর্যন্ত হতে হচ্ছে। এই ঘটনা নিয়েই এবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস। সারাবিশ্বে প্রতি ১১ মিনিটে একজন নারী বা মেয়েকে একজন অন্তরঙ্গ সঙ্গী বা পরিবারের সদস্য দ্বারা খুন হচ্ছে বলেই দাবি করেছেন গুতেরেস।
নারীদের বিরুদ্ধে হিংসা দূর করতে প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা হয়, এর আগে মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন গুতেরেস।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, নারী এবং মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন। এমন ঘটনা বেড়েই চলেছে এটি বিশ্বের জন্য বড় চ্যালঞ্জ, প্রত্যেক দেশের সরকারের উচিত জঘন্য এই অপরাধের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।
গুতেরেস আরও বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে মানুষের মধ্যে নানা কারণে দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সংসারে বা প্রিয়জনের সঙ্গে অশান্তির সৃষ্টি হয়। ঘটনায় নারীরা শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। পরিচিত মানুষ ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নারীদের হেনস্তা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ সমস্যার সমাধানে সরকারগুলোকে উদ্যোগী হতে হবে এবং নারীদের সুরক্ষার জন্য তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের মধ্যে নারী-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
এদিকে, প্রতি ১১ মিনিটে একজন মহিলা বা মেয়ে একজন অন্তরঙ্গ অংশীদার বা পরিবারের সদস্যের দ্বারা নিহত হয় এবং আমরা জানি যে অন্যান্য চাপ, করোনা মহামারী থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক অশান্তি, অনিবার্যভাবে আরও বেশি শারীরিক এবং মৌখিক নির্যাতনের দিকে নিয়ে যায়।
জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেসের মন্তব্য এমন, এক সময়ে এসেছে যখন ভারতে শ্রদ্ধা ওয়াকারের নৃশংস খুনের ঘটনা গোটা দেশ সহ বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। শ্রদ্ধার লিভ-ইন পার্টনার তথা প্রেমিক তাঁকে ৩৫ টুকরো করে ১৮ দিন ধরে ছড়িয়ে দেয়।
এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইতিহাসে নারীদের প্রতি ব্যাপক নির্যাতন করা হতো। সময় এসেছে তাদের অধিকার ফিরিয়ে, তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করার এবং নারীর মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস নারী অধিকার নিশ্চিত করতে নারী অধিকার সংগঠন ও আন্দোলনের জন্য ৫০ শতাংশ তহবিল বাড়াতে হবে ও সেই সাথে গর্বিতভাবে ঘোষণা করার আহ্বান জানান যে “আমরা সবাই নারীবাদী।”