প্রথমবার রিটার্ন বা কর দিতে একধরনের আনন্দ অনুভূত হয়, মানুষ নিজেকে দেশের গর্বিত করদাতা ভাবেন। তবে এবার প্রথম যাঁরা বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দেবেন, তাঁদের কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে। ফরম পূরণ করার সময় কৌশলী হতে হবে।
বিশেষ করে সম্পদ ও খরচের হিসাব দেওয়ার সময় যথেষ্ট কৌশলী হতে হবে । এ মৌসুমে রিটার্ন জমার সময় শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ নভেম্বর।
প্রথমবার রিটার্ন ফরম পূরণের সময় সম্পদ লুকানো যাবে না, যা সম্পদ আছে সব দেখিয়ে দেওয়া ভালো। কারণ, পরের বছর সম্পদ দেখাতে গেলে কীভাবে ওই সম্পদ অর্জিত হলো, সেই প্রশ্ন করতে পারেন কর কর্মকর্তারা। তাই কর কর্মকর্তার নানা প্রশ্নের মুখে পড়ার আগে সম্পদ দেখিয়ে দেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ।
অনেকে প্রথমবার সম্পদ না দেখিয়ে প্রতিবছর একটু একটু করে সম্পদ দেখাতে চান, এটা ঠিক নয়, জমিজমাসহ বাসার যাবতীয় ইলেকট্রনিক পণ্য, আসবাবপত্র সবই প্রথমবার দেখিয়ে ফেলুন।
এমনকি বিয়েতে উপহার হিসেবে স্বর্ণালংকার, এ ছাড়া নগদ টাকা থাকলে, তা–ও যেন বাদ না পড়ে। অবশ্য অনেকে কৌশল করে বেশি সম্পদ দেখান, যেমন সোনা আছে ২০ ভরি, কিন্তু দেখিয়ে দেন ৫০ ভরি। নগদ টাকার পরিমাণও বাড়িয়ে দেখান। এতে সুবিধা হলো, ভবিষ্যতে অর্জিত সম্পদ সমন্বয় করা যায়। কারণ, কর কর্মকর্তারা প্রথমবার রিটার্ন জমাকারীদের প্রতি সদয় থাকেন, যা দেখান তাই মেনে নেন কর্মকর্তারা ।
অন্যদিকে খরচের ক্ষেত্রে রিটার্নে কিপটেমি করাই ভালো। আয়ের সঙ্গে খরচের যেন সংগতি থাকে, কর কর্মকর্তার যেন সন্দেহ না হয়। কারণ, আপনি হয়তো ছোটখাটো ব্যবসা বা চাকরি করেন, কিন্তু আপনার সন্তানদের ভালো স্কুলে পড়ান, নিয়মিত বিদেশে ঘুরতে যান।
রিটার্নে যদি এসবের প্রতিফলন থাকে, তাহলে বিপদ। আবার প্রথম বছর সাধারণ জীবনযাপনের পারিবারিক খরচ দিলেন কিন্তু আয় তেমন না বাড়লেও পরের বছর বিলাসী জীবনযাপনের তথ্য দিলেন, তাহলেও বিপদ।
এদিকে এনবিআরের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৮০ লাখ করদাতা শনাক্তকরণ (টিআইএন) নম্বরধারী আছেন। গত বছর টিআইএনধারীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, সব টিআইএনধারীর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক।