যুক্তরাষ্ট্রে বড়দিনের পর সবচেয়ে বড় যে উৎসব উদযাপিত হয় তা হলো থ্যাংকস গিভিং ডে বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন দিবস। প্রতিবছর নভেম্বরের শেষ বৃহস্পতিবার এই উৎসব উদযাপন করা হয়।
বিশেষ এ দিনে দেশ ও জাতির সাফল্যের জন্য সর্বস্তরের নাগরিক সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানান। কয়েক শতাব্দী ধরেই মূলত মার্কিনদের উৎসব হলেও ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে উত্তর আমেরিকা জুড়ে উদযাপন হয় থ্যাংস গিভিং ডে।
এদিকে ১৭৮৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনকে কংগ্রেস অনুরোধ করেন এ দিবসকে সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করার জন্য । প্রেসিডেন্ট সে অনুযায়ী একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন এবং প্রতি বছর নভেম্বরের চতুর্থ অর্থাৎ শেষ বৃহস্পতিবার এ থ্যাংকস গিভিং ডে
উদযাপন করা শুরু হয়।
ইতিহাসবিদদের মতে, ১৬২১ সালের ২৬ নভেম্বর ছিল প্রথম থ্যাংকস গিভিং ডে। ১৮৬৩ সালে প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন একটি জাতীয় ধন্যবাদ দিবস উদযাপন করার আহ্বান জানান।
তিনি নভেম্বর মাসের শেষ বৃহস্পতিবার 'থ্যাংস গিভিং ডে' হিসেবে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করেন এরপর থেকে বন্ধুত্ব ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশে নভেম্বরের শেষ বৃহস্পতিবারেই উৎসবটি পালনের প্রথা শুরু হয়। ধীরে ধীরে তা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে গোটা উত্তর আমেরিকাতেই ছড়িয়ে পড়ে।
বেশ জাঁকজমক পূর্ণভাবে এবারে নভেম্বর মাসে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) উদযাপন করা হয় থ্যাংকস গিভিং ডে। সর্বজনীন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিণত হয় দিনটি।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও ম্যাসির উদ্যোগে ম্যানহাটনে এ অনুষ্ঠিত হয় এক বর্ণিল শোভাযাত্রা। বিশাল বর্ণাঢ্য প্যারেডে অংশ নেন হাজার হাজার নারী পুরুষ। মার্কিনদের পাশাপাশি বাংলাদেশি কমিউনিটিও উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদ্যাপন করে।
এরপর থ্যাংকস গিভিং ডে'র পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার 'ব্ল্যাক ফ্রাইডে' নামে পরিচিত। এই শুক্রবার ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য কোনো কালো দিন নয় বরং বছরের সেরা মূল্য হ্রাসের দিনটি ক্রেতাদের কাছে যেমন রঙিন তেমনি পণ্য বিক্রি করে লাভবান ব্যবসায়ীদের কাছেও আনন্দঘনময়।
কম দামে ভালো কিছু কেনার জন্য দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন ক্রেতারা।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল টার্কি ফেডারেশনের মতে, ৯০ শতাংশ মার্কিন এই দিনে টার্কি দিয়েই সারা দিনের ভোজনপর্ব সম্পন্ন করে।
রীতি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে ন্যাশনাল টার্কি ফেডারেশন থেকে প্রাপ্ত একটি টার্কিকে জীবন ভিক্ষা দিয়ে সাধারণ ক্ষমা করেন প্রেসিডেন্ট। এটি 'হোয়াইট হাউস টার্কি পার্ডন' নামে পরিচিত।